Company Description
About বুনন -bunonn
বাংলাদেশের যেসব নারী শাড়ী পছন্দ করেন, তাদের সংগ্রহে অন্তত একটি হলেও জামদানি শাড়ী থাকে। নান্দনিক ডিজাইন এবং দামে বেশি হওয়ার কারণে জামদানীর সঙ্গে আভিজাত্য এবং রুচিশীলতা – এই দুটি শব্দ জড়িয়ে আছে। ঐতিহ্যবাহী নকশা ও বুননের কারণে ২০১৬ সালে জামদানীকে বাংলাদেশের ভৌগোলিক নির্দেশক (জিআই) পণ্য হিসেবে স্বীকৃতি দেয় ইউনেস্কো। কিন্তু অভিযোগ রয়েছে আজকাল বিভিন্ন মার্কেটে জামদানীর নামে বিক্রি হচ্ছে নকল শাড়ী, ফলে ঐতিহ্যবাহী জামদানীর আবেদন থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন ক্রেতারা। অনেক বিক্রেতা জামদানী বলে ভারতীয় কটন, টাঙ্গাইলের তাঁত, পাবনা ও রাজশাহীর সিল্ক শাড়ী ক্রেতাদের হাতে তুলে দিচ্ছেন। প্রশ্ন হল আসল জামদানী শাড়ী চেনার উপায় তাহলে কী ? আসল জামদানী শাড়ী চেনার উপায়: জামদানী শাড়ী কেনার আগে তিনটি বিষয়কে গুরুত্ব দিতে হবে – শাড়ীর দাম, সূতার মান এবং কাজের সূক্ষ্মতা। আসল জামদানী শাড়ী তাঁতিরা হাতে বুনন করেন বলে এগুলো তৈরি করা অনেক কষ্টসাধ্য ও সময়সাপেক্ষ। তাই এগুলোর দামও অন্যান্য শাড়ীর তুলনায় বেশি হয়ে থাকে।
একটি জামদানী শাড়ী তৈরি করতে দুইজন কারিগর যদি প্রতিদিন ১২ থেকে ১৪ ঘণ্টা শ্রম দেন, তাহলে ডিজাইন ভেদে পুরো শাড়ী তৈরি হতে সাত দিন থেকে ছয় মাস পর্যন্ত সময় লাগতে পারে। সাধারণত জামদানী শাড়ি তৈরির সময়, সূতার মান ও কাজের সূক্ষ্মতা বিবেচনায় একটি জামদানীর দাম ৩,০০০ টাকা থেকে এক লাখ ৫০,০০০ টাকা কিংবা তারচেয়েও বেশি হতে পারে। কিন্তু মেশিনে বোনা শাড়ীতে তেমন সময় বা শ্রম দিতে হয় না। এজন্য দামও তুলনামূলক অনেক কম। জামদানী শাড়ী হাতে বোনা হওয়ায়, শাড়ীর ডিজাইন হয় খুব সূক্ষ্ম এবং নিখুঁত। ডিজাইনগুলো হয় মসৃণ। কারিগর প্রতিটি সুতো হাত দিয়ে ঘুরিয়ে ঘুরিয়ে বুনন করেন। সুতার কোন অংশ বের হয়ে থাকে না। এ কারণে জামদানী শাড়ীর কোনটা সামনের অংশ আর কোনটা ভেতরের অংশ, তা পার্থক্য করা বেশ কঠিন। জামদানী শাড়ীর কোনটা সামনের অংশ আর কোনটা ভেতরের অংশ সেটা পার্থক্য করা বেশ কঠিন। মেশিনে বোনা শাড়ীতে কেবল জামদানীর অনুকরণে হুবহু নকশা সেঁটে দেয়া হয়। এই শাড়ীগুলোর উল্টো পিঠের সূতাগুলো কাটা কাটা অবস্থায় বের হয়ে থাকে। জামদানী শাড়ী চেনার আরেকটি উপায় হতে পারে এর সূতা ও মসৃণতা যাচাই করা। জামদানী শাড়ী বয়নে সুতি ও সিল্ক সূতা ব্যবহার করা হয়ে থাকে। সূতার ব্যবহারের দিক থেকে জামদানী সাধারণ তিন ধরণের হয়ে থাকে।
১. ফুল কটন জামদানী – যেটা তুলার সূতা দিয়ে তৈরি করা হয়।
২. হাফ-সিল্ক জামদানী – যেখানে আড়াআড়ি সুতাগুলো হয় রেশমের আর লম্বালম্বি সূতাগুলো হয় তুলার।
৩. ফুল-সিল্ক জামদানী – যেখানে দুই প্রান্তের সূতাই রেশমের হয়ে থাকে। শাড়ী কেনার আগে এই সূতা সম্পর্কে নিশ্চিত হওয়া জরুরি, কেননা নকল জামদানী শাড়ী সিল্কের পরিবর্তে পলেস্টার বা নাইলনের মতো কৃত্রিম সূতা ব্যবহার করে থাকে। সূতার মান যাচাই করতে শাড়ীর আঁচলের শেষ প্রান্তে যে কিছু সুতা বের হয়ে থাকে, সেগুলো মনোযোগ দিয়ে দেখতে হবে। নাইলনের সূতা মসৃণ হয়, আর জামদানীর সিল্ক সূতায় মাড় দেয়া থাকায় সেটা হবে অপেক্ষাকৃত অমসৃণ। সাধারণ পিওর সিল্কের সূতা টানাটানি করলে ছিঁড়ে যায় এবং এই সূতা আগুনে পোড়ালে চুলের মতো পোড়া গন্ধ বেরোয়। জামদানীর সুতায় মাড় দেয়া থাকে। ছবির ক্যাপশান, জামদানীর সূতায় মাড় দেয়া থাকে আঁচলের শেষ প্রান্তের সূতাগুলো আঙ্গুল দিয়ে মোড়ানোর পর যদি সুতাগুলো জড়িয়ে যায়, তবে সেটা সিল্ক সূতার তৈরি আর যদি সূতাগুলো যেকোনো অবস্থায় সমান থাকে, তবে তা নাইলন। এছাড়া কাউন্ট দিয়ে সূতার মান বোঝানো হয়। যে সুতার কাউন্ট যত বেশি, সেই সুতা তত চিকন। আর সূতা যতো চিকন, কাজ ততই সূক্ষ্ম হবে – যা ভাল মানের জামদানী শাড়ীর প্রধান বৈশিষ্ট্য। জামদানী শাড়ীর সূতাগুলো সাধারণত ৩২-২৫০ কাউন্টের হয়ে থাকে। জামদানীর মান মূলত কাজের এই সূক্ষ্মতার উপর নির্ভর করে। আর শাড়ী কতোটা সূক্ষ্ম হবে, তা নির্ভর করে এই সূতা এবং তাঁতির দক্ষতার উপর। সাধারণত যে শাড়ীটা কাজ যতো সূক্ষ্ম, স্বাভাবিকভাবেই তার দামও ততো বেশি হয়ে থাকে। আবার সুতা যত চিকন, শাড়ী বুনতে সময়ও লাগে তত বেশি – কাজেই দামও বেশি পড়ে। অন্যদিকে মেশিনে বোনা শাড়ীর সুতা ২৪-৪০ কাউন্টের হয়ে থাকে। তবে মেশিনে বোনা শাড়ীগুলোর বুনন অনেক ঘন হয়। তাঁতে আর যাই হোক মেশিনের মতো ঘন বুনন দেয়া সম্ভব না। জামদানী শাড়ীতে যে অংশটুকু কোমরে গুঁজে রাখা হয়, ওই অংশটায় অর্থাৎ সাড়ে পাঁচ হাত পর্যন্ত কোন পাড় বোনা থাকে না। কিন্তু মেশিনে বোনা শাড়ির পুরো অংশ জুড়েই পাড় থাকে। হাতে বোনা জামদানী ওজনে হালকা হয়ে থাকে এবং পরতেও আরামদায়ক। তবে জামদানী খুব যত্ন করে রাখতে হয়, না হলে বেশিদিন টেকসই হয় না। অন্যদিকে কোনও রকম হাতের ছোঁয়া ছাড়া, জামদানীর ডিজাইন নকল করা, মেশিনে বোনা শাড়ী কৃত্রিম সুতোয় তৈরি হয় বলে এই শাড়ীগুলো হয় ভারি এবং খসখসে। তবে এই শাড়ীগুলো বছর বছর ধরে পরা যায়। জামদানী শাড়ী তৈরিতে দীর্ঘ সময় ও কঠোর শ্রমের কারণে জামদানীর দাম তাই অন্যান্য শাড়ীর তুলনায় বেশি পড়ে। জামদানীর প্রধান বৈশিষ্ট্য এর জ্যামিতিক নকশা। এই জ্যামিতিক নকশায় ফুটিয়ে তোলা হয় নানা ধরণের ফুল, লতাপাতা, কলকাসহ নানা ডিজাইন। জামদানীর ডিজাইন বিভিন্ন ধরণের হয়ে থাকে। তারমধ্যে পান্না হাজার, তেরছা, পানসি, ময়ূরপঙ্খী, বটপাতা, করলা, জাল, বুটিদার, জলপাড়, দুবলি, ডুরিয়া, বলিহার, কটিহার, কলকাপাড় ইত্যাদি বেশি প্রচলিত। জামদানীতে ছোট ছোট ফুল বা লতাপাতার ডিজাইন যদি তেরছা ভাবে সারিবদ্ধ থাকে, তাহলে তাকে তেরছা জামদানি বলে। ফুল, লতার বুটি জাল বুননের মতো সমস্ত জমিনে থাকলে তাকে জালার নকশা বলা হয়। পুরো জমিনে সারিবদ্ধ ফুলকাটা জামদানী ফুলওয়ার নামে পরিচিত। ডুরিয়া জামদানী ডোরাকাটা নকশায় সাজানো থাকে। তেমনি পাড়ে কলকির নকশা থাকলে তা হবে কলকাপাড়।
জামদানী শাড়ী
টাঙ্গাইলের হাফ সিল্ক শাড়ী
টাঙ্গাইলের তাঁতের শাড়ী
ঝর্না শাড়ী
টাঙ্গাইলের শাড়ী
Member Information
Business Type | : |
|
Founded in | : | 2017 |
Employees | : | 1-5 |
Member Since | : | 27 Jan 2021 |
Membership Type | : | Free Member |
Business Category | : | Apparel & Fashion |
Company Overview
- Wholesaler